Cross-Column

Tuesday, July 11, 2017

leonardo da vinchi

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি মানুষটি কেমন ছিলেন?
মোনালিসা ছবিটার কথা সবার হয়তো মনে আছে ,যিনি এই বিশ্ববিখ্যাত  ছবিটি একেঁছিলেন তার নাম ছিল লিওনার্দো দা ভিঞ্চি।এই দা ভিঞ্চির মতো মেধাবী পুরুষ ও কীর্তিমান শিল্পী পৃথিবীতে আর জন্মায় নি। এই মানুষটি কেমন ছিলেন সে সম্পর্কে আজ কিছু বলবো। 
১৪৫২ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ই এপ্রিল ইতালির বিখ্যাত ফ্লোরেন্স শহরের থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে ভিঞ্চি নামে একটি ছোট শহরে লিওনার্দো এর জন্ম হয়। 
চতুর্দশ শতাব্দী থেকেই ইতালিতে নতুন যুগ এর হাওয়া বইতে শুরু করেছিল। এই যুগটাকে বলা হয় রেনেসাঁস বা নবজাগরণের যুগ। লিওনার্দোর উপর এই যুগ এর প্রভাব বিশেষ ভাবে পড়েছিল ,তাই তাকে বুঝতে গেলে এই যুগটি সম্পর্কে একটু জানা দরকার। 
ঐতিহাসিকরা জানেন যে ,খ্রিস্টপূর্ব যুগে গ্রিসের সভ্যতা থেকে ইউরোপীয় সভ্যতা এর সৃষ্টি। যিশুখ্রিস্ট এর জন্মের ৮০০ বছর আগে থেকেই গ্রিস পশ্চিমের সভ্যতার ইতিহাসে একটা বিশেষ স্থান দখল করে। সামান্য কয়েকটি শহর নিয়ে গড়া এই গ্রিস সাম্রাজ্য বেশ কিছু প্রতিভাধর মনীষীদের আবির্ভাবের ফলে শিল্প ,সাহিত্য ,দর্শন ,স্থাপত্যে,ভাস্কর্যে ,রাজনীতি ইত্যাদিতে এমনি এক উন্নত চেহারা নিয়েছিল যেমন আর ইউরোপের কোথাও কখনো হয়নি। 
খ্রিস্টপূর্ব ১৪৬ অব্দে রোমের হাতে গ্রিসের পরাজয় ঘটে। কিন্তু তা সত্বেও গ্রিসের সংস্কৃতিকে রোম অগ্রাহ্য করতে পারেনি। গ্রিসের পরাজয়ের পরেও রোমের বহু ছাত্র দলে দলে যেত গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের একাডেমীতে পড়াশুনা করতে। 
এদিকে রোম সাম্রাজ্য ক্রমশ বাড়তে বাড়তে পুবে মেসোপটেমিয়া থেকে শুরু করে উত্তর আফ্রিকা,দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপ ,এমনকি ইংল্যান্ডের বেশ কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়েছিল। 
রোমানরা হিন্দুদের মতো অনেক দেবদেবী এর পুজো করতো। এদিকে ততদিন এ খ্রিস্টধর্ম এর প্রভাব বিস্তার হতে শুরু করেছে। চতুর্থ শতাব্দীতে রোম সম্রাট কনস্টান্টিন বুঝতে পারলেন যে পালাবদলের সময় এসেছে,খ্রিস্টধর্ম কে আর ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। তাই তিনি রোম সাম্রাজ্যের কেন্দ্রস্থল ইতালি থেকে সরিয়ে নিয়ে গেলেন পুবে বাইজান্টিয়াম প্রদেশে ,নাম হলো কনস্টান্টিনোপল,এই  কনস্টান্টিনোপল হলো রোম সাম্রাজ্যের ঘাঁটি। 
অষ্টম শতাব্দী থেকে রোম সাম্রাজ্যের ভাঙন ধরতে শুরু করে। অবশেষে মধ্য এশিয়ার তুর্কিদের দাপটে কনস্টান্টিনোপল শহর ছাড়া বাইজান্টিয়াম এর সবকিছু তুর্কিদের অধিকারে চলে যায়। এরপর ক্রমশ ইসলাম ধর্ম ছড়িয়ে পড়ে মধ্য এশিয়ার সমরখন্দ -বোখরা   থেকে পশ্চিমে স্পেন পর্যন্ত।
য়ুরোপ তখন ইসলাম ও খ্রিস্ট ধর্ম পাশাপাশি রয়েছে এবং দুয়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।
রোমের পতন এর পর এই খ্রিস্টধর্ম পশ্চিমের জনসাধারণকে একসূত্রে বাঁধতে পেরেছিলো। এই যুগের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল ধর্মযাজকদের বিলাসিতা। তাদের স্থান ছিল সম্রাটের উপরে। তাদের বিধান কে সবসময় চূড়ান্ত বলে মেনে নেওয়া হতো। ফলে স্বাধীন ভাবনা চিন্তার সুযোগ কমে যায়। এই যুগ কে য়ুরোপে "মধ্যযুগ" বলা হয়। ইতালীয়রা এই যুগকে বলতো ''অন্ধকার যুগ''।
চতুর্দশ শতাব্দী থেকে ইতালিও মনীষীরা আবার নতুন করে গ্ৰীক আদর্শের কথা ভাবতে শুরু করেন। ধর্মের গোঁড়ামী র জন্য মানুষ যে প্রকৃত স্বাধীনতা হারাতে বসেছে সেটা তারা বুঝতে পারেন। 
এই যে মানুষের মনে নানান প্রশ্ন ,নানান জিজ্ঞাসার উদয় ও নিজের বিচার বিশ্লেষণ দিয়ে অজানাকে জানার যে প্রয়াস,সেটাই হলো নবজাগরণের প্রধান লক্ষণ। 
আর এই বিশেষ যুগের বিশেষ পরিবেশে লিওনার্দো এর জন্ম। 
তাঁর বয়স যখন ১৪ তখন তার বাবা তাকে পাঠান ফ্লোরেন্সের বিখ্যাত শিল্পী ভেরোচ্চিতের ষ্টুডিও তে কাজ শিখবার জন্য। অল্প দিনেই তিনি তার গুরুকে ছাড়িয়ে যান। 
কিন্তু লিওনার্দো এর কাজের সংখ্যা যথেষ্ট ছিল না -গোটা দশেক ছবি তিনি এঁকেছিলেন।তিনি শুধু চিত্রশিল্পীই ছিলেন না। তিনি ছিলেন সাহিত্যিক ,বিজ্ঞানী,শারীরবিদ্যাবিদ ও আবিস্কারক। 
এই প্রতিটি বিষয় নিয়ে তিনি সারাজীবন ছবি একেঁছেন ও লিখে গেছেন।তাঁর লেখার ভাষা ছিল যেমন সুন্দর,তেমনি সহজ। তাঁর মতো পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা খুব কম লোকের থাকে। 
 লিওনার্দো বেশিদূর লেখাপড়া করেছিলেন তা নয়,তিনি লেখা ও পড়ার পাশাপাশি অঙ্ক নিয়েও চর্চা করেছেন। এই সমস্ত বিষয় তিনি একটি খাতাতে লিপিবদ্ধ করতেন,এই খাতায় ছিল তার নিত্যসঙ্গী।
তার লেখার মধ্যে বিশেষত্ব ছিল,তিনি লিখতেন বাঁ হাতে আর লেখা চলতো ডানদিক থেকে বাঁদিকে অর্থাৎ সেটা পড়তে হলে তাকে আয়নার সামনে ধরতে হতো।আঁকা তিনি বাঁ হাতে আঁকতেন।
সাময়িকদের থেকে চিন্তা শক্তিতে তিনি অনেক এগিয়েছিলেন,পঞ্চদশ শতাব্দীতে তার মাথায় যুদ্ধ ট্যাঙ্ক বা হেলিকপ্টারের চিন্তা আসে,তার নোটবুকগুলিতে এর আভাস মেলে। যদিও যুদ্ধ জিনিসটা তিনি পছন্দ করতেন না। 
মানুষের অঙ্গপ্রতঙ্গ এর গতিপ্রকৃতি নির্ধারণের জন্য তিনি নিজে হাতে ছুড়ি দিয়ে শবব্যবচ্ছেদ করেন ও তাঁর ছবি আঁকেন। 
পাখী ওড়ার ছবি এঁকে তিনি ওড়ার বিজ্ঞানসম্মত কারণ আবিষ্কারের চেষ্টা করেছিলেন। বাদ্যযন্ত্র এর নকশা এঁকেছেন প্রচুর।
১৫১৯ খ্রিস্টাব্দের ২ রা মে এই মহান চিত্রশিল্পী মারা যান। 
মৃত্যু এর কয়েক বছর আগে তিনি নিজেই একটি নিজের ছবি আঁকেন।

1 comment:

  1. Lucky Day Casino Resort - Mapyro
    Get directions, reviews and information for Lucky Day Casino Resort in Maricopa, AZ. Casinos Near Casino. 1. 원주 출장안마 Las 창원 출장안마 Vegas 충청북도 출장안마 Blvd. West. 영천 출장마사지 From Mapyro. 시흥 출장마사지

    ReplyDelete